হাবল নেটওয়ার্ক তাদের মহাকাশ-ভিত্তিক ব্লুটুথ প্রযুক্তিতে বড় ধরনের আপগ্রেড আনতে যাচ্ছে। সিয়াটলভিত্তিক এই স্টার্টআপটি এমন একটি নেটওয়ার্ক গড়তে চায়, যা অ্যাপলের 'Find My' পরিষেবার মতোই কাজ করবে, তবে লক্ষ্য থাকবে বিভিন্ন ব্যবসা ও শিল্পখাতে।
এই লক্ষ্যে হাবল তৈরি করেছে একটি নতুন প্রজন্মের ফেজড-অ্যারে রিসিভার, যা 'পৃথিবী ঘিরে একটি সত্যিকারের ব্লুটুথ লেয়ার' গঠনে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও অ্যালেক্স হারো। এই উন্নত পেলোডটি ২০২৭ সালে উৎক্ষেপণযোগ্য মিউন স্পেসের দুটি বৃহৎ নতুন স্যাটেলাইট MuSat XL-এ যুক্ত করা হবে।
এই স্যাটেলাইট দুটি প্রতি ১২ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে ট্র্যাকিংয়ের সুযোগ এনে দেবে এবং বিদ্যমান প্রযুক্তির তুলনায় ৩০ গুণ কম বিদ্যুৎ খরচে ব্লুটুথ সিগন্যাল শনাক্ত করতে পারবে। এর ফলে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে থাকা ট্র্যাকিং ট্যাগ ও সেন্সরের ব্যাটারির আয়ু অনেক বেড়ে যাবে।
২০২৪ সালে হাবল ইতিহাস সৃষ্টি করে প্রথম কোম্পানি হিসেবে সরাসরি একটি স্যাটেলাইটের সঙ্গে ব্লুটুথ সংযোগ স্থাপন করে। তাদের মূল প্রস্তাব হলো—বিশেষ হার্ডওয়্যার ছাড়াই কেবল একটি ফার্মওয়্যার সংযুক্ত করে বিদ্যমান চিপসেটে স্যাটেলাইট সংযোগ সক্ষম করা।
বর্তমানে হাবলের সাতটি স্যাটেলাইট কক্ষপথে কাজ করছে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে ৬০টি স্যাটেলাইট স্থাপনের লক্ষ্য রয়েছে। নতুন MuSat XL প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শক্তিশালী পেলোড, অপটিক্যাল ক্রসলিঙ্ক, দ্রুত ডাউনলিংক ও প্রায় রিয়েল-টাইম যোগাযোগ সম্ভব হবে।
মিউন স্পেস, মাত্র চার বছরের পুরোনো হলেও, দ্রুত উৎপাদন সক্ষমতা গড়ে তুলেছে। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি গ্রেগরি স্মিরিন জানান, ২০২৭ সালের মধ্যে প্রতি বছর ৫০০টি স্যাটেলাইট উৎপাদনের জন্য সান হোসে কারখানাকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
MuSat XL প্ল্যাটফর্মে প্রথম গ্রাহক হিসেবে হাবলের অন্তর্ভুক্তি প্রতিষ্ঠানটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির বাজারেও প্রবেশের সংকেত দিচ্ছে। স্পেস ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (SDA) মিসাইল ডিফেন্স কনস্টেলেশনে এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের সম্ভাবনাও উঁকি দিচ্ছে।
মিউনের ব্যবসায়িক মডেল ‘Space-as-a-Service’ নামে পরিচিত, যার অধীনে তারা হালো নামের নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্লায়েন্টদের মহাকাশে দ্রুত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করে। এর ফলে হাবল তাদের BLE নেটওয়ার্কের উন্নয়নে মনোযোগ দিতে পারবে, আর মিউন সামলাবে স্যাটেলাইট পরিচালনার দায়িত্ব।