
কোম্পানী আইন যুগোপযোগীকরণের দাবি ঢাকা চেম্বারের
সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে আইন ও বিধিনিষেধ মেনে চলা আবশ্যক এবং বিশ্বায়নের যুগে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে হলে ব্যবসায়ে কমপ্লায়েন্স বজায় রাখার কোন বিকল্প নেই। নিয়মকানুন মেনে চললে সব ধরনের অনিয়ম ও অপব্যবহার রোধ করা সহজতর হবে। বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর সংস্কার ও যুগোপযোগীকরণের কোন বিকল্প নেই।
শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘পরিচালনা পর্ষদ সভা ও বার্ষিক সাধারণ সভার গুরুত্ব এবং লিমিটেড কোম্পানির কমপ্লায়েন্স’ শীষর্ক ওয়ার্কশপে এসব কথা বলেন বক্তারা। এতে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) রেজিস্টার এ. কে. এম নুরুন্নবী কবির প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালার সূচনা বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও শিল্পখাতের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে লিমিটেড কোম্পানি ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সুশাসনের গুরুত্ব প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, অনেক উদ্যোক্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কোম্পানি আইন, গঠনতন্ত্র বা কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত বিষয়ের জটিলতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার অভাবে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হয়, যা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে আরজেএসসি’র রেজিস্টার এ. কে. এম নুরুন্নবী কবির বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় পৌনে ৩ লক্ষ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আরজেএসসিতে নিবন্ধিত রয়েছে এবং কোম্পানি নিবন্ধনের প্রায় সকল প্রক্রিয়াই অনলাইনে করা হয়ে থাকে।
তিনি জানান, শুধুমাত্র কোম্পানির শেয়ার ট্রান্সফারের বিষয়টি আনলাইন সেবার বাইরে আছে, যেটি ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের ব্যবসায়ী সমাজের জন্য ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, অনেক উদ্যোক্তাই ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সময়সমত বার্ষিক সাধারণ সভা ও অডিট রিপোর্ট প্রণয়ন না করার কারণে কমপ্লায়েন্স অনুসরণে ব্যর্থ হন, যেটি তাদেরকে আরজেএসসিতে নিবন্ধনসহ অন্যান্য সেবা প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। বিশেষ করে সরকারের সব সেবা প্রাপ্তির পাশাপাশি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কমপ্লায়েন্স মেনে চলার উপর তিনি জোরারোপ করেন।
আর্টিসান চাটার্ড অ্যান্ড একাউন্টস্-এর পার্টনার মো: সেলিম রেজা এবং মোহাম্মদ সানাউল্লাহ অ্যান্ড এসোসিয়েটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও লিড কনসালটেন্ট মোহাম্মদ সানাউল্লাহ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তারা বলেন, সকল ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে আইন ও বিধিনিষেধ মেনে চলা আবশ্যক এবং বিশ্বায়নের যুগে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে হলে ব্যবসায়ে কমপ্লায়েন্স বজায় রাখার কোন বিকল্প নেই। তারা উল্লেখ করেন, নিয়মকানুন মেনে চললে সকল ধরনের অনিয়ম ও অপব্যবহার রোধ করা সহজতর হবে এবং সেই সাথে বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর সংস্কার ও যুগোপযোগীকরণের কোন বিকল্প নেই।
কর্মশালায় ঢাকা চেম্বারের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর শতাধিক প্রতিনিধি যোগদান করেন এবং উল্লেখিত বিষয়ে সম্যক ধারণা প্রদান করা হয়। এ সময় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো: সালিম সোলায়মান ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।