
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট (এনডিএ) দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দি
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এনডিএতে দেশের স্বার্থ অগ্রাধিকার: নিরাপত্তা উপদেষ্টা
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট (এনডিএ) নিয়ে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, এ চুক্তি দেশের স্বার্থবিরোধী হলে সেটি পরিবর্তন, সংশোধন কিংবা বাতিল করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজার নেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি প্রেস মিনিস্টারের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়।
ড. খলিলুর রহমান বলেন,
“মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দফতরের (ইউএসটিআর) সঙ্গে আলোচনার শুরুতেই আমরা তিনটি মৌলিক বিষয় স্পষ্ট করেছি। প্রথমত, বর্তমানে বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে। এই সরকারের কোনো সংসদ নেই, এবং এটি জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারকে চুক্তির বাইরে রাখা যাবে না। এজন্য চুক্তিতে সংশোধন, পরিবর্তন বা বাতিলের সুযোগ রাখার প্রস্তাব দিয়েছি যুক্তরাষ্ট্রকে।”
তিনি আরো বলেন,
“দ্বিতীয়ত, আমরা এমন কোনো দায় নেব না যা আমাদের সক্ষমতার বাইরে। চুক্তির দায়ে পড়ে ভবিষ্যতে তা রক্ষা করতে না পারলে সেটি অর্থহীন হবে। তাই দায়িত্ব গ্রহণেও আমাদের সতর্কতা রয়েছে। তৃতীয়ত, চুক্তিতে কোনো তৃতীয় দেশের নাম উল্লেখ থাকবে না—এটিও আমরা স্পষ্ট করেছি।”
নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানান, আলোচনার পর্যায়ে এনডিএ একটি প্রচলিত কূটনৈতিক প্রক্রিয়া। শুল্ক হ্রাস সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নেওয়া প্রতিটি দেশকেই এনডিএ করতে হয়। বিষয়গুলো চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত গোপন রাখা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রথা।
“যেমন, গঙ্গা নদী নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কোনো চুক্তি হলে, আলোচনার পর্যায়ে খসড়া জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না। তবে আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করব, চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত হলে সেটি জনসমক্ষে প্রকাশ করুক।”
তিনি বলেন,
“আমরা কোনো কৃতিত্ব নিতে আসিনি। বর্তমান সরকারের মেয়াদ আর ৬-৭ মাস। এর মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান ধরে রাখতে কাজ করছি। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ যেমন ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া শুল্ক হ্রাসে সক্রিয়ভাবে আলোচনায় ছিল। আমরা যদি এগিয়ে না আসতাম, তাহলে হয়তো বাংলাদেশকেই ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হতো।”
ড. খলিলুর রহমান জানান, বর্তমানে যে ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারিত হয়েছে, তা প্রতিযোগী দেশগুলোর অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভারত এখনো এই সুবিধা পায়নি এবং কানাডাও আলোচনায় পিছিয়ে থাকায় বড় ধাক্কা খেয়েছে।
“অন্তত আমরা এতদূর আলোচনা এগিয়ে নিতে পেরেছি—এটিই আমাদের অর্জন।”